নিজস্ব সংবাদদাতা : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের (এনসিসি) ভোট গ্রহণ ১৬ জানুয়ারি। নির্বাচনী আচরণ বিধি অনুযায়ী শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) মধ্য রাতে সকল প্রকার প্রচারণার শেষ দিন। এ দিন শহরের প্রাণকেন্দ্র ২নং রেলগেইট এলাকায় পথ সভা, যা পরবর্তিতে বিশাল সমাবেশে রূপ নেয়। সমাবেশ শেষে গণমিছিলের মাধ্যমে বিশাল শোডাউন করেছেন এনসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী।
শুক্রবার (১৪ জানুয়ারী) বিকেল ৩টায় শুরু হওয়া সমাবেশে প্রধাণ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক জাহাঙ্গীর কবির নানক। বিশেষ অতিথি ছিলেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের এমপি নজরুল ইসলাম বাবুসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে প্রধাণ অতিথি জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘আসন্ন সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিশাল এই সমাবেশের শেষ দেখতে পাচ্ছিনা। আজকের সভার সভাপতি সাবেক মেয়র, আমাদের শ্রদ্ধেয় নেতা দুঃসময়ের কান্ডারী মরহুম আলী আহাম্মদ চুনকার সুযোগ্য কন্যা, জননেত্রী শেখ হাসিনার স্নেহধণ্য, যিনি তিন তিনবার সফলভাবে এই নগরীর দায়িত্ব পালন করেছেন, সেই সংগ্রামী নেত্রী সেলিনা হায়াৎ আইভী এখানে উপস্থিত আছেন। কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তৃতা করেছেন। আগামী ১৬ তারিখ নির্বাচনে জিতবে কারা, নৌকা, নৌকা এবং নৌকা। ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভীকে নেত্রী মনোনয়ন দিয়েছেন। আমরা ঐ বোর্ডে সদস্য ছিলাম। নেত্রী বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন নিয়ে কোন আলোচনা হবেনা। আমার প্রার্থী হলো আইভী এবং আইভী। সেই আইভীকে নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। এই নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের জন্য আইভীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করুন। আমরা প্রশাসনকে গতকাল বলে এসেছি, এই নারায়ণগঞ্জে কোন প্রকার বিশৃংখলা হতে পরবেনা। কোন সন্ত্রাসীদের উঁকি ঝুকি আমরা মানবো না। আপনারা শান্তি চান’। এরপর নৌকার পক্ষে শ্লোগান দেন নানক, এবং বলেন লক্ষ ভোটে এবার নৌকা জিতবে।
বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেছেন, আইভী সাহসী নারী হিসেবে এ নারায়ণগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। যিনি আজ সন্ত্রাস বিরোধী সংগ্রামে নেমেছেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনকে বৃহত্তর নগরী হিসেবে গড়তে চান। তৃতীয় বারের মতো তিনি আমাদের কাছে ভোটের জন্য এসেছেন। আমাদের নেত্রী বলেছেন তুমি নারায়ণগঞ্জবাসীকে বলে দাও- আমি আমার আইভীকে নারায়ণগঞ্জে পাঠালাম। তোমরা আইভীকে বিজয়ী করো।
তিনি আরও বলেন, আমাদের একজন প্রার্থী আছেন, তার মার্কা হাতি। প্রথমে বললেন আমি বিএনপির প্রার্থী। পরে বললেন তিনি জনতার প্রার্থী। আগামী ১৬ জানুয়ারি হাতি বনে ফিরে যাবে। জনতার বিজয় হবে।
সমাবেশের সভাপতি এনসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষকে ভালোবেসে আস্থা রেখে মাননীয় প্রধাণমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার হাতে নৌকা তুলে দিয়েছেন। সেজন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞ, তারা মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে দেখেছেন, এই নারায়ণগঞ্জের মানুষের মনের অবস্থান বুঝতে পেরেছেন। আপনারা এসেছেন জেনে গেলেন, দেখে গেলেন, এই নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের ঘাঁটি, নৌকার ঘাটি। আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিলো পাইকপাড়ার মিউচুয়েল ক্লাবে। এই নারায়ণগঞ্জ ঐতিহ্য ইতিহাসে সমৃদ্ধ শহর। এই শহরকে কালে ভদ্রে দূষিত করা হয়েছে। বিষাক্ত করা হয়েছে। নৌকা মানেই উন্নয়ণ। নৌকা মানেই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট্র একটা কর্মী। আমার বাবা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মী ছিলেন, মাটি ও মানুষের সেবা করেছেন। আবার বাবা আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন, কিভাবে মানুষের কাছে যেতে হয়। তিনি আমাকে বলেছিলেন, তুমি মানুষের কাছে যাও, তোমার কাংখিত জিনিস পেয়ে যাবা। মানুষের মাঝে আল্লাহ বিরাজমান। আমি আমার বাবার ডাকে সাড়া দিয়ে আপনাদের কাছে এসেছি। দীর্ঘ ১৮টি বছর আপনাদের কল্যানে কাজ করেছি।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের দরবারে এসেছি শান্তির বার্তা নিয়ে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে অত্যাচার অবিচার সন্ত্রাস খুনের বিরুদ্ধে। নিশ্চই এই নৌকা আইভীর নৌকা, বিজয়ের নৌকা, ৭১ এর নৌকা, বঙ্গবন্ধুর নৌকা, শেখ হাসিনার নৌকা, মাওলা আলীর নৌকা। এই নৌকাকে রোধ করার ক্ষমতা কারো নাই, কারো নাই, কারো নাই।
সমাবেশ শেষে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর নেতৃত্বে একটি বিশাল গণমিছিল শহরের প্রধাণ প্রধাণ সড়ক প্রদক্ষিন করেন।