রাজধানী ঢাকার ১৮০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঢাকা কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের সদ্যবিদায়ী বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক রিয়াজুল হাকিম বাবুল ও মোঃ মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করে পরিসংখ্যান বিভাগ।
মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি)ঢাকা কলেজের শহীদ আ,ন,ম খুরম অডিটোরিয়ামে সকাল ১১ টা নাগাদ এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটির সূচনা হয়।
এসময় সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রাধান অধ্যাপক শফিক নেওয়াজ তালুকদার। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ অধ্যাপক আইকে সেলিমুল্লাহ খন্দকার। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাধ্যক্ষ এটিএম মইনুল হোসেন ও শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ড. আব্দুল কুদ্দুস সিকদার।
জানা যায় করোনা মহামারিতে অবসরে যাওয়া পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপকদ্বয় পর্যায়ক্রমে দুজনে ছিলেন বিভাগীয় প্রধান। অধ্যাপক রিয়াজুল হাকিম তার শিক্ষকতার জীবনের প্রায় পুরো সময়টাই অতিবাহিত করেছেন ঢাকা কলেজে এ ছাড়াও ঢাকা কলেজ ইন্টারন্যাশনাল ছাত্রাবাসের তত্বাবধায়কও ছিলেন।
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জনাব রুনা নাসরিন বলেন অধ্যাপক রিয়াজুল হাকিম বাবুল স্যার ও অধ্যাপক মোঃ মহিউদ্দিন চৌধুরী স্যার ছিলেন আমাদের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রাণ, পরিসংখ্যান বিভাগের ভিত্তি মজবুতের কাজটা হয়েছিলো রিয়াজুল হাকিম বাবুল স্যার এর হাত ধরেই কেননা তিনি এখানে দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষকতা করে আসছেন। তাদের দুজনের অবদান কখনই ভুলবার নয় আমরা তাদের অভাব অক্ষরে অক্ষরে টের পাচ্ছি তারা আমাদের যেভাবে আগলে রেখেছিল আমরা সেই অবদান কখনই ভুলবো নাহ।
ছাত্রদের মধ্য থেকে স্মৃতি চারন করতে গিয়ে ১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী আল আমিন তন্ময় বলেন আজ স্যারদের কোন ভাবে বিদায় দেওয়া হচ্ছে এই কথাটি বলা যাবে নাহ। তারা আজীবন শিক্ষক আর শিক্ষতার সাথেই থাকবেন। আমরা যতবার যত সমস্যা নিয়ে স্যারের কাছে উপস্থিত হয়েছি প্রতিবারেই স্যাররা আমাদের সকল কিছুই সঠিক পরামর্শ দিয়ে সমাধান করেছেন। স্যাররা আমাদের বাবা মায়ের মত লালন পালন করে মানুষের মত মানুষ বানানোর রাস্তায় তুলে দিছেন তারা আমাদের অভিভাবক তাদের ঋণ আমরা কোন ভাবেই পরিষদ করতে পারবো নাহ আমরা মনের অযান্তেই অনেক ভুল করে ফেলছি সকল শিক্ষার্থীর পক্ষে আমি স্যারের কাছে ক্ষমা প্রার্থী।
এসময় আরো স্মৃতি চারণ মুলক বক্তব্য রাখেন পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব আলতাফ হোসেন। এসময় আরো স্মৃতি চারণ করেন ঢাকা কলেজ পরিসংখ্যান বিভাগে কৃতি শিক্ষার্থী ও বর্তমানে ঢাকা কলেজ পরিসংখ্যান বিভাগের প্রভাষক মোঃ মুজাহিদ ইসলাম মুজাহিদ।
অধ্যাপক রিয়াজুল হাকিম বাবুল স্যার তার বক্তব্যে বলেন। আমার জীবনের অর্ধেকটা সময় কাটালাম ঢাকা কলেজে এখানে শিক্ষকতা করে আমি এই ঢাকা কলেজের সকল অধ্যক্ষদের থেকে এবং পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পেয়েছিলেন। ঢাকা এর বর্তমান শহীদ মিনার এর সংস্করণ এর কাজ তার উদ্যোগ এ হয়েছিল বলে তিনি জানান।
এছাড়াও ঢাকা কলেজের প্রতিটি কো কারিকুলাম এক্টিভিটিতে তিনি তার বিভাগ নিয়ে সবার আগেই উপস্থিত থাকতেন। তিনি তার শিক্ষকতার শুরু ১৩ তম বিসিএস এ সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার এর মাধ্যমে দিয়ে শুরুতেই তিনি যোগদান করেছিলেন জগন্নাথ কলেজে পরিসংখ্যান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা কলেজে বদলি হয়ে আসেন মধ্য দিয়ে তিনি কিছু দিনের জন্য কুমিল্লাহ ভিক্টোরিয়া কলেজে বদলি হয়ে গেলেও তারপরবর্তীতে আবারো আসেন ঢাকা কলেজে তার বনাঢ্য শিক্ষকতার সমাপ্তি হলো ঢাকা কলেজে।
অধ্যাপক মোঃ মহিউদ্দিন তার বক্তব্য দিতে গিয়ে অতান্ত আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন আমি বারবার শিক্ত হই এই কলেজ প্রাঙ্গনে এসে। বিশেষত আমার পরিসংখ্যান বিভাগ আমার কাছে ছিলো শিক্ষক ছাত্র বান্ধব একটা পরিবেশ সব সময় আমাকে সাবলিল ভাবে কাজ করতে উৎসাহিত করেছে। কোন কাজে আমার সিদ্ধান্তকে কেউ অগ্রাহ্য কিংবা পরিত্যাজ্য করেনি। আর শিক্ষকা যে মহান পেশা তা অবসরে গিয়েই উপলব্ধি করছি একেবারে হারে হারেই। আমি ধন্য হই বারংবার এমন শিক্ষকতা পেশার সাথে যুক্ত থাকতে পেরে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. আব্দুল কুদ্দুস সিকদার। বলেন কলেজের যে কোন কাজে যখনই ডাকা হয়েছে তাদের সরব উপস্থিতি আমাদের ধন্য করেছিলো।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ আই কে সেলিম উল্লাহ খন্দকার বলেন,
প্রিয় সহকর্মীরা যখন অবসরে যায় আমি একটি কথাই বলি এই ঢাকা কলের ১৮০ বছর ধরে তার গৌরব ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন এই কলেজ এমন অধ্যাপকবৃন্দ।
মহিউদ্দিন ভাই আমার এক ব্যাচ সিনিয়র বিসিএস এ তিনি ৭ম ব্যাচের আমি ৮ম বিসিএসের তিনি অত্যন্ত সহজ সরল মানুষ খুবই সুন্দর জীবন যাপন করেন।
আর অধ্যাপক রিয়াজুল হাকিম আমার দীর্ঘদিন এর সহকর্মী তার সাথে অনেক স্মৃতি আজকে উনাকে নিয়ে কিছু বলবো নাহ উনি একজন শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষক এই এতটুকুই বলবো।
আর শিক্ষার্থীদের বলবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের যে নোটিশ সেটা হলো কোভিড এর কারণে যত সিডিউল সব গুলই প্লান করা হয়েছে। এই বছরের মধ্যে সব স্থগিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ও পাবলিক অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের থেকে আমাদের শিক্ষার্থীদের যেন পিছিয়ে থাকতে না হয়।
প্রতিটা কলেজের প্রতিটা ডিপার্টমেন্ট এর সার্থকতা হচ্ছে ভালো রেজাল্ট। আর প্রতিটা ডিপার্টমেন্ট এর উচিৎ পরিসংখ্যান বিভাগের মত শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বান্ধব পরিবেশ তৈরী করা
কোন ডিপার্টমেন্ট এর শিক্ষকদের অভাব থাকবেনা।
নতুন শিক্ষাবর্ষে ভর্তিচ্ছুদের শুধুই সাবজেক্ট নাহ কলেজ ও মাইগ্রেশান করতে পারবে ১-৫ বার মাইগ্রেশান করতে পারবে। সেক্ষেত্রে তাকে ভর্তি নিশ্চয়ন স্বরুপ একটি নির্দিষ্ট টাকা পেমেন্ট করতে হবে।
আমিও অধ্যাপক রিয়াজুল হাকিম বাবুল স্যার ও অধ্যাপক মোঃ মহিউদ্দিন স্যারকে শুভেচ্ছা তাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
বিভাগীয় প্রধানের বক্তাব্যে অধ্যাপক শফিক নেওয়াজ তালুকদার বলের একটি বিভাগের প্রান শিক্ষার্থী। এই শিক্ষার্থীরা এত সুন্দর আয়োজন করেছেন আমি বিভাগীয় প্রধান হিসেবে আমি সকলের নিকট কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি, জানাচ্ছি ধন্যবাদ।
তারা দুজনেই একাধারে একাডেমিক বন্ধু,