স্টাফ রিপোর্টার (এস এম মিঠু)
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার সড়াইল গ্রামের মাঠে রাতের আধাঁরে এক বর্গাচাষীর ৪০ শতাংশ জমিতে বেড়ে ওঠা লাউ গাছ কর্তন করেছে দূবৃর্ত্তরা। বুধবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় দূবৃর্ত্তরা ওই বর্গাচাষীর ক্ষেতের লাউ গাছগুলো কর্তন করেছে।
সড়াইল গ্রামের মাঠে গিয়ে জানা যায়, কৃষক আকবর আলী ফকির। তিনি রাতের বেলায় অন্যের গভীর নলকূপের পাহাড়াদার হিসেবে কাজ করেন আর দিনের বেলায় অন্যের জমি বর্গা নিয়ে আতশী আবাদ চাষাবাদ করেন।
ওই গ্রামের বিপ্লব হোসেনের নিকট থেকে আমন ধান মাড়াইয়ের পর ৪০ শতক জমি এক বছরের জন্য ২০ হাজার টাকায় বর্গা নেন। উচু জমি বলে তিনি সেই জমিতে পৌষ মাসের প্রথম দিকে লাউ গাছের বীজ বপণ করেন। এরপর গাছ বের হতে থাকে। নিজেই পরিচর্যা করেন।
গাছগুলোও বেশ বেড়েই চলেছে। ইতমধ্যে ফুলও এসেছে। আর কয়েকদিন পর ফল আসবে। প্রতিদিনের ন্যায় গত বুধবার বিকেলে চাষী আকবর আলী ফকির তার লাউ ক্ষেতে কীটনাশক স্প্রে করে সন্ধ্যায় বাড়ীতে যান। খাওয়া দাওয়া সেরে আকবর আলী যথারীতি তার ক্ষেতের পাশ দিয়ে গভীর নলকূপের পাহাড়ার কাজে চলে যান। বৃহস্পতিবার সকালে ক্ষেতে গিয়ে দেখতে পান লাউ গাছের পাতাগুলো শুকিয়ে দুমরে মুচরে যাচ্ছে। বাঁশের মাচার নিচে তাকিয়ে তিনি দেখতে পান সব গাছের গোড়া কর্তন করেছে ফলে গাছগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। রাতের আধাঁরে কে বা কাহারা তার ক্ষেতের লাউ গাছগুলো কেটে ফেলেছে।
প্রতিবেশী দুলাল মিয়া বলেন, একজনের সাথে আরেক জনের শক্রুতা থাকতেই পারে, তবে ফসলের সাথে কেন ? এর একটা বিহিত হওয়া দরকার।
আরেক প্রতিবেশী ফাহিমা আক্তার বলেন, যত বড় অপরাধীই আকবর আলী হউক না কেন, তার ফসল কেটে ফেলা ঠিক হয়নি। যে তার ফসল কেটে ফেলেছে তারা আকবর আলীর পেটে লাথি মেরেছে, তার পরিবারের গলায় পা তুলে দিয়েছে। ফসল কাটার বিচার হওয়া দরকার।
বর্গাচাষী আকবর আলী ফকির বলেন, ছোট বেলা থেকে দারিদ্রতার মাঝে বড় হয়েছি। কাউকে তুই বলেও গালমন্দ করিনি। মনে করি আমার কোনো শক্রু নেই। কিন্তু আজ সেই ভাবনা আমাকে অনেক দুরে নিয়ে গেছে। সংসারে ছেলে-মেয়েদের মুখে দুবেলা খাবার যোগাতে রাতের ঘুম হারাম করে অন্যের গভীর নলকূপ পাহাড়া দেই আমি। দিনের বেলায় অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে আসছি। আজ সেটিও তাদের সহ্য হলো না। কয়েকদিন পরই লাউ ধরতো গাছে। আমার সব আশাই আজ ভেস্তে গেল। ভেবেছিলাম লাউ বিক্রি করে একটি গাভী কিনবো। তাও হলো না। যারা আমার ফসল নষ্ঠ করেছে তাদের যেন আল্লাহপাক কঠিনভাবে শাস্তি দেন। থানায় গিয়েছিলাম অভিযোগও দিয়ে আসছি।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম মালিক বলেন, কৃষক আকবর আলী অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।